রেলগাড়ি চড়ে ঝিকঝিক শব্দ শুনতে শুনতে বাড়ি যাওয়ার মজাই আলাদা। বাড়ির মানুষও ঘন ঘন ঘড়ি দেখে ট্রেন আসার অপেক্ষায়। এই ট্রেনের কারণে নিরাপদে মানুষ ঘরে ফিরে, দেখা হয় স্বজন-বন্ধুদের সাথে। মজবুত হয় সম্পর্ক। রেল অর্থনীতির চাকা ঘোরায়। গ্রামের পণ্য চলে আসে শহরে। শহর থেকে আধুনিক পণ্য পৌঁছে যায় সুদূর গ্রামে। শুধু কি তাই? এখন তো বলাই যায় যে, রেল জীবনসঙ্গীও খুঁজে দেয়! রেল মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ দুই মন্ত্রী যার জ্বলন্ত্ব উদাহরণ।
আগের রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক তো প্রতিজ্ঞাই করেছিলেন, জীবনে বিবাহ করবেন না। যে কারণে তিনি চিরকুমার সমিতির সদস্যও ছিলেন। কিন্তু রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হওয়ার পর ৬৭ বছর বয়সে তিনি সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেন। জীবনের বাকি সময়টা কাটাতে একজন জীবনসঙ্গীর প্রয়োজন অনুভব করেন। যেই ভাবা সেই কাজ। রেলমন্ত্রীর বিয়ে হয়ে যায় হনুফা আক্তার রিক্তার সঙ্গে। ৫ লাখ ১ টাকা দেনমোহরে জীবনের প্রথম বিয়ে করেন মুজিবুল হক। সেটাও ৬৭ বছর বয়সে।
মহা ধুমধাম করে আয়োজিত বিয়েতে ১৫০০ লোক খাওয়ানো হয়। এখন তারা সুখেই আছেন। সংসারে এসেছে তিনি সন্তান। ওই সময় রেলমন্ত্রীর বিয়ে দেশব্যাপী আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। খোদ প্রধানমন্ত্রীও রেলমন্ত্রীর বিবাহিত জীবন নিয়ে মজার কথা বলেছিলেন এবং শুভকামনাও জানিয়েছিলেন। মুজিবুল হকের আমল থেকেই রেলে পরিবর্তনের হাওয়া লাগে। পরবর্তী সময়ে সেই হাওয়া আরও জোরালো করেন বর্তমান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
পঞ্চগর-২ আসন থেকে মনোনীত সাংসদ নূরুল ইসলাম সুজনের আমলে রেলওয়ের লক্ষ্যণীয় উন্নতি হচ্ছে। নতুন নতুন ট্রেন চালু হয়েছে। বিদেশ থেকে নতুন ইঞ্জিন-কোচ এসেছে। ঝিমিয়ে পড়া রেলওয়ে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। রেলের উন্নয়নের পাশাপাশি নিজের একাকী জীবন আর ভালো লাগছিল না মন্ত্রীর। তিনি অবশ্য এর আগেও বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন তার স্ত্রী মারা যান। তাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। সবাই বিবাহিত।
গত কয়েকদিন ধরেই নূরুল ইসলাম সুজনের বিয়ের গুঞ্জন চলছিল। অবশেষে জানা গেল, ৬৫ বছর বয়সে নূরুল ইসলাম সুজন বিয়ে করছেন দিনাজপুরের মেয়ে অ্যাডভোকেট শাম্মী আকতারকে। গত ৫ জুন উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। শাম্মী আকতারের আগের একটি সংসার ছিল। স্বামীর সঙ্গে ২০১১ সালে ডিভোর্স হয়ে যায়। সেই সংসারে তাদের একটি মেয়েও আছে। মন্ত্রীর নতুন জীবন শুরুতে দেশবাসী শুভকামনায় ভরিয়ে দিয়েছেন। আর মুজিবুল হক নিশ্চয়ই তার উত্তরসূরিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।