Tuesday, November 19, 2024

সাত স্টেশনে টিকিট বিক্রি বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা

Must read

নতুন রেলপথে ঢালারচর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত স্টেশন রয়েছে মোট ১০টি। কিন্তু এর মধ্যে সাতটি স্টেশনে রেলওয়ের কোনো নিজস্ব লোকবল নেই।

পাবনার ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথের ৭টি স্টেশনে ১১ দিন ধরে টিকিট বিক্রিসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। অস্থায়ী লোকবল দিয়ে এসব স্টেশন চালানো হচ্ছিল। ওই কর্মীরা তাঁদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। অন্যদিকে এসব স্টেশন থেকে টিকিট ছাড়া যাত্রী ওঠায় বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে ট্রেনের কর্মীদের।

পশ্চিমাঞ্চল রেলের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের জুনে ঈশ্বরদী-ঢালারচর রেলপথটি চালু হয়। ঢালারচর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ নামের একটি ট্রেন চলাচল করছে। সকালে ট্রেনটি ঢালারচর থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিকেলে আবার ফিরে আসে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ৪২টি স্টেশনে নিজস্ব কোনো লোকবল নেই। দৈনিক মজুরিপ্রাপ্ত লোকবল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। 

নাসির উদ্দিন, রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কর্মকর্তা

নতুন রেলপথে ঢালারচর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত স্টেশন রয়েছে মোট ১০টি। কিন্তু স্টেশনগুলোর জন্য রেলওয়ে পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ দেয়নি। ১০টি স্টেশনের মধ্যে বাঁধের হাট, কাশিনাথপুর, সাঁথিয়া, রাজাপুর, তাঁতিবন্ধ, দুবলিয়া, রাঘবপুর—এই ৭টি স্টেশনে রেলওয়ের কোনো নিজস্ব লোকবল নেই। দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী লোকবল দিয়ে স্টেশনগুলো চালানো হচ্ছিল। ১৭ অক্টোবর ওই কর্মীরা তাঁদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁরা এখন ঢাকায় আছেন। ফলে লোকবল না থাকায় স্টেশন সাতটির সব কার্যক্রম ও টিকিট বিক্রি বন্ধ রাখা হয়েছে।

স্টেশনগুলো থেকে নিয়মিত ট্রেনে চলা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ট্রেন চালুর পর থেকে এ রুটে যাত্রীর চাপ বেশি। প্রতিদিন শত শত যাত্রী চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কাজে রাজশাহী যাওয়া-আসা করে। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। ফলে ট্রেনটি প্রতিদিন কানায় কানায় পূর্ণ থাকে। এর মধ্যেই হঠাৎ সাতটি স্টেশনে টিকিট বিক্রি বন্ধ রাখায় তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। তারা বিনা টিকিটে ট্রেনে উঠে বিভিন্নভাবে হয়রানির স্বীকার হচ্ছে।

বাঁধের হাট স্টেশনের যাত্রী মনিরুজ্জামান বলেন, গত ১১ দিনের মধ্যে তিনি ২ দিন রাজশাহীতে গেছেন। দুদিনই টিকিট ছাড়া ট্রেনে উঠতে হয়েছে। ভিড় ঠেলে ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষকদের (টিটিই) কাছ থেকে টিকিট কেটেছেন। এতে যাত্রীদের সঙ্গে তাঁদের প্রায়ই বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনা ঘটছে। 

সাঁথিয়া স্টেশনের যাত্রী শামিম হোসেন বলেন, শুধু টিকিট নিয়ে বিড়ম্বনা তৈরি হয়েছে, তা–ও নয়। লোকবল না থাকায় প্রতিটি স্টেশন অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। রাতে ট্রেন থামার পর যাত্রীরা স্টেশনে নামতে ভয় পাচ্ছে।

ট্রেনটিতে দায়িত্ব পালন করা একজন টিটিই বলেন, সাতটি স্টেশন বন্ধ থাকায় শুধু যাত্রীরা নয়, ট্রেনের কর্মীরাও বিপদে আছেন। ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড়। এর মধ্যেই বিনা টিকিটে শত শত যাত্রী থাকছে। ট্রেনের মধ্যে এত মানুষের টিকিট করে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রতিদিন রেলওয়ের ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোকসান হচ্ছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, শুধু এ রেলপথ নয়, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ৪২টি স্টেশনে নিজস্ব কোনো লোকবল নেই। দৈনিক মজুরিপ্রাপ্ত লোকবল দিয়ে স্টেশনগুলো চালানো হচ্ছে। হঠাৎ তাঁরা আন্দোলনে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যা সমাধানে তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সূত্র: প্রথম আলো

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article