Tuesday, November 19, 2024

মাস কাটতে না কাটতেই অচল রেলওয়ের টিকিট ভেন্ডিং মেশিন

Must read

।। নিউজ ডেস্ক ।।
গত মাসে ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশের বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে ১৫টি টিকিট ভেন্ডিং মেশিন (টিভিএম) বসিয়ে ছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু ব্যবহারিক ত্রুটি এবং ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে স্থাপনের ২০ দিনেও মেশিনগুলো চালু করতে পারেনি কতৃপক্ষ।

যাত্রীদের সেবার মান বাড়াতে নতুন এ সেবা চালুর কথা থাকলেও সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভাবে রাখা হয়নি ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা। যাত্রীদের ব্যাংকের গোপনীয় তথ্য দেখা যাওয়াসহ নেই নগদ টাকা দিয়ে টিকিট কাটার সুযোগ। ফলে মুখ থুবড়ে পড়তে যাচ্ছে উদ্যোগটি। চারদিক থেকে দড়ির ব্যারিকেড দিয়ে স্টেশনে স্টেশনে অচলাবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে মেশিনগুলো।

সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে টিভিএম বসানোয় এমন জটিলতা দেখা দিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা। তবে মেশিনগুলো দ্রুত চালুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জনান তারা।

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, “এই স্টেশনে ৪টি মেশিন বসানোর পর চালু করে দেখা হয়েছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় বর্তমানে এগুলো বন্ধ আছে।”

রেলওয়ের তথ্যমতে, রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সেবা সংস্থাটির টিকিট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহজ ডট কমের সঙ্গে চুক্তির অংশ হিসেবে সারাদেশে ১৫টি টিভিএম বসায়। পাশাপাশি ১০টি সার্ভিস কিয়স্ক পরিষেবা প্রযুক্তি ও ৬০টি জায়ান্ট স্ক্রিন ডিসপ্লে স্থাপন করা হয়। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে মেশিনগুলো বসানো শুরু হয়।

এরমধ্যে ঢাকা স্টেশনে ৪টি, ঢাকা বিমানবন্দরে ২টি, চট্টগ্রামে ২টি, সিলেটে ১টি, কক্সবাজারে ১টি, রাজশাহীতে ২টি, খুলনায় ১টি, পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনে ১টি ও রংপুর রেলওয়ে স্টেশনে ১টি টিভিএম বসানো হয়েছে।

কিয়স্ক সার্ভিস পরিষেবা প্রযুক্তি ঢাকা, বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, রাজশাহী, খুলনা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশন ও ময়মনসিংহে বসানো হয়েছে। এছাড়া, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ৩১টি এবং পশ্চিমাঞ্চলে ২৯টি জায়ান্ট স্ক্রিন ডিসপ্লে বসানো হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের একজন বাণিজ্যিক কর্মকর্তা বলেন, “মেট্রোরেলের টিভিএমগুলো মানুষ সবসময় ব্যবহার করেন। কারণ সেখানে নগদ টাকা দিয়ে টিকিট কেনার সুযোগ আছে। কিন্তু রেলের ভেন্ডিং মেশিনে এটিএম কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কিনতে হয়।”

“এছাড়া টিভিএমর ডিসপ্লেতে ব্যাংকের গোপনীয় তথ্য দেখা যায়, যা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির নজরে আসতে পারে। এজন্য গোপনীয়তা বা নিরাপত্তার সংকট থেকে যায়। এছাড়া বাড়তি ২০ টাকা চার্জ নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে। স্টেশনে এসে টিকিট কেটেও যাত্রীদের অনলাইনের মতো বাড়তি চার্জ দিতে হচ্ছে,” যোগ করেন তিনি।

রেলের হয়ে টিকিট বিক্রি ক্ষেত্রে কাউন্টার থেকে প্রতি টিকিটের বিপরীতে ২৫ পয়সা পায় সহজ ডট কম। অনলাইনে বিক্রি হওয়া প্রতি টিকিটের ২০ টাকা চার্জে সাড়ে ৬ টাকা পায় কোম্পানিটি। সাড়ে ৬ টাকা পায় যে ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন সম্পন্ন করা হয়। সরকার ভ্যাট পায় ৩ টাকা। বাকি ৪ টাকা পায় রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্ট। টিভিএম মেশিনের টাকাও একইভাবে বণ্টন হবে।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান বলেন, “মেশিনগুলো বসানো হয়েছে। চালানোর বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।”

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, “এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে টিভিএমগুলো বসানোর কাজ চলছে। মেশিনগুলো চালুর জন্য প্রস্তত রয়েছে। রেল ভবনের নির্দেশনা পেলেই চালু করা হবে।”

সূত্রঃ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article