Rail News 24: রেল সূত্রে খবর, এতদিন ডরমেটরি কক্ষ ছিল। সেখানেই থাকতেন চালকরা। ছিল না কোনও বাতানুকূল যন্ত্র। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেন চালিয়ে এসে গরমের মধ্যে চালকদের ঘুমোতে হত। এমনকী,মনঃসংযোগ যাতে সঠিক থাকে তার জন্য ছিল না কোনও ব্যবস্থা।
কলকাতা: একের পর এক অভিযোগ উঠছিল রেলের বিরুদ্ধে। চালকদের ঘুম হচ্ছে না, বিশ্রাম পাচ্ছেন না তাঁরা। এরপরই নড়েচড়ে বসল রেল। চালকদের জন্য আলাদা ভাবে ব্যবস্থা করা হল বিশ্রাম কক্ষের। শিয়ালদহ স্টেশনের মেন শাখার উপরে অর্থাৎ তিনতলায় এই বিশ্রাম কক্ষ তৈরি করা হয়েছে।
কলকাতা রেল সূত্রে খবর, এতদিন ডরমেটরি কক্ষ ছিল। সেখানেই থাকতেন চালকরা। ছিল না কোনও বাতানুকূল যন্ত্র। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেন চালিয়ে এসে গরমের মধ্যে চালকদের ঘুমোতে হত। এমনকী,মনঃসংযোগ যাতে সঠিক থাকে তার জন্য ছিল না কোনও ব্যবস্থা। এবার পূর্ব রেলের তরফ মোট ৮টি বিশ্রাম কক্ষ করা হল। এক একটি কক্ষে ২টি করে বিছানা রয়েছে। মোট ১৬ টি পুরুষ চালকদের জন্য। ৮টি বিছানা রয়েছে মহিলা চালকদের জন্য। তাঁদের রুম সম্পূর্ণ আলাদা। অত্যাধুনিক এসি মেশিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে ওই বিশ্রাম কক্ষগুলি সর্বদা ঠান্ডা থাকে। এছাড়া মনোসংযোগ সঠিক রাখার জন্য আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে বসে যোগ ব্যায়াম করতে পারবেন চালকরা। তৈরি করা হয়েছে নতুন রিডিং রুম। সেখানে বই রাখা হয়েছে। চালকদের রান্নাঘর এবং খাবারের জায়গা সম্পূর্ণভাবে ভোল পাল্টে ফেলা হয়েছে। তবে সব থেকে আধুনিক ব্যবস্থা করা হয়েছে, চালকদের যেখানে অ্যাটেনডেন্স দিতে হয় সেই ঘর। সেখানে অত্যাধুনিক মেশিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেখানে বায়োমেট্রিক ছাপ দিয়ে উপস্থিতির তথ্য দিতে হবে চালকদের। এমনকী,মেশিনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে অ্যালকোহল টেস্টের ব্যবস্থা। মেশিনগুলির উপরে থাকছে একটি করে স্ট্র। যেগুলি মেশিনের একটি নির্দিষ্ট অংশে ঢুকিয়ে চালকদের মুখ দিয়ে ফুঁ দিতে হচ্ছে। যেখানে পরীক্ষা করলেই চালু করা মদ খেয়ে ট্রেন চালাতে আসছেন কি না সেটা পরীক্ষা হয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার বলি হন একাধিক ব্যক্তি। সেই সময় বারবার অভিযোগ উঠছিল চালক ঘুমিয়ে পড়ায় এই বিপত্তি। প্রাক্তন রাজধানী এক্সপ্রেসের এক চালক কার্যত অভিযোগ করে বলেন, “লোকো পাইলটদের উপর অত্যাচার করা হয়। ছুটি পায় না। অসুস্থ হলে ধমক দিয়ে লোকো পাইলটদের চাপ দিয়ে কাজ করানো হয়। পর্যাপ্ত ঘুম হয় না। ডিউটির কোনও ঠিক থাকে না।” এরপরই নয়া পদক্ষেপ করল রেল।
তবে এতদিন কেন ঘুম ভাঙেনি রেল মন্ত্রকের, সেটাই প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে এদিন উপস্থিত রেলের কর্তারাও স্বীকার করেছেন, “জলপাইগুড়ির ঘটনার পর চালকদের বিশ্রাম নিয়ে একটা প্রশ্ন উঠেছে। সে কারণেই পূর্ব রেলের তরফে তাঁদের ডিভিশনে চলা এক্সপ্রেস, লোকাল ট্রেন গুলি চালকদের জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থা করা হল।”