Thursday, April 17, 2025

রেলের পাঁচ প্রকল্পে ভারতের অর্থায়নে অনিশ্চিয়তা, খোঁজা হচ্ছে বিকল্প

Must read

আলমগীর স্বপন:

ভারতের সহায়তায় বাংলাদেশ রেলওয়ের ছয় প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ চুক্তি হয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। এর মধ্যে শেষ হয়েছে শুধু খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ।

বাকি পাঁচ প্রকল্পের মধ্যে দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে রংপুরের কাউনিয়া রেলপথ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণকাজ শুরুই হয়নি। সার্বিক অগ্রগতি মাত্র শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ। খুলনা-দর্শনা রেলপথ নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথের কাজের অগ্রগতি ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ।

ঢাকা-টঙ্গী ডাবল লাইনের কাজ হয়েছে ৩৭ শতাংশ ১১ ভাগ, আর কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ প্রকল্পের কাজ হয়েছে ৫১ ভাগ। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এই দুই প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি বন্ধ।

এ অবস্থায় ঋণদাতা ভারতীয় ইক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে অর্থায়নের বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে ঢাকা। কিন্তু প্রশ্ন অনিশ্চয়তা কি কাটবে? নাকি বিকল্প পথ খুঁজবে বাংলাদেশ?

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ভারত যদি এই দুই প্রকল্পে অর্থায়ন না করে তাহলে সরকারের তহবিল থেকে টাকা দিয়ে কাজ শেষ করতে হবে। যেহেতু প্রকল্প দুইটির কাজ মাঝপথে।

ঋণ সহায়তায় ভারতের গড়িমসির কারণে বিকল্প অর্থায়নের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। যদিও এর আগে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সবশেষ অবস্থান জানতে বসতে চায় বাংলাদেশ। তাতে সুরাহা না এলে নিজস্ব ও বিকল্প বিদেশি অর্থায়নের সিদ্ধান্ত নেবে রেল মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে দুইটি প্রকল্পের কাজ নাও হতে পারে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম জানান, ভারতের এক্সিম ব্যাংকের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসে আলোচনা করে গেছে। কদিন আগে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী দল এ নিয়ে কথা বলতে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসেও গেছে। তাই তিনি এখনই হতাশ না হওয়ার কথা বলছেন।

অর্থায়নের এই অনিশ্চয়তার মুখে প্রশ্ন আসছে, ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় রেলের বাকি তিন প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী? এরইমধ্যে প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিশদ নকশার কাজ শেষ হয়েছে। অর্থায়নের জন্য চিঠি দেয়া হলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কোনও সাড়া নেই।

ফাহিমুল ইসলাম বলেন, বিকল্প অর্থায়নের বিষয়টি দেখা হবে। ভারতের সাথেও আলোচনা হবে। তারা অর্থায়ন করলেও তো আর ঝামেলা নেই। বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষ।

আফজাল হোসেন বলেন, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ রেলপথের বিষয়ে ইআরডিকে চিঠি দিয়েছি, তাতে আমরা লিখেছি, একমাসের মধ্যে এক্সিম ব্যাংক থেকে আমরা জানতে চাই, তারা আদৌ অর্থায়ন করবে কি না। যদি না করে তাহলে আমরা বিকল্প খুঁজবো। অন্যগুলোর জন্য অর্থ খোঁজা হবে; যদি পাওয়া না যায়, তাহলে সমস্যা নেই। যেহেতু কাজ শুরুই হয়নি।

আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচুত্যির পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। এর জের ধরে বন্ধ আছে তিন যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী, মিতালী ও বন্ধন। চলছে না পণ্যবাহী ট্রেনও।

রেল সচিব বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গত ২০ আগস্ট ভারতীয় দূতাবাসকে কূটনৈতিক নোট (নোট ভারবাল) দেয়া হয়েছে। এখনও আমরা কোনো জবাব পাইনি।

প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কে জোয়ার-ভাটা থাকলেও বন্ধ থাকা যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন দ্রুত চালুর বিষয়ে আশাবাদি রেল মন্ত্রণালয়।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article