Tuesday, April 8, 2025

মাইলেজের দাবি পূরণ হয়নি, ২৮ জানুয়ারি থেকে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত রেলের রানিং স্টাফদের

Must read

রেলওয়ে রানিং স্টাফদের মধ্যে লোকোমাস্টার (এলএম), সহকারী লোকোমাস্টার (এএলএম), ও সাব-লোকোমাস্টার (এসএলএম) রয়েছেন। আট ঘণ্টার কর্মদিবস থাকলেও তাদের গড়ে ১৫–১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়।

মাইলেজ সুবিধা পুনর্বহাল এবং এ সুবিধা অনুযায়ী পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানের দাবিতে বিক্ষোভরত রেলওয়ে রানিং স্টাফরা আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে রেল ভবনে রেলওয়ের মহাপরিচালকের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো পূরণের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বহুবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন পার হলেও তারা কোনো সমাধানে পৌঁছায়নি। তারা বারবার সময় চেয়ে আসছে।’

‘আমরা আজকের সভার পর ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ২৮ তারিখ সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু হবে,’ বলেন তিনি।

রেলওয়ে রানিং স্টাফদের মধ্যে লোকোমাস্টার (এলএম), সহকারী লোকোমাস্টার (এএলএম), ও সাব-লোকোমাস্টার (এসএলএম) রয়েছেন। আট ঘণ্টার কর্মদিবস থাকলেও তাদের গড়ে ১৫–১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়।

এ কারণে তাদের বেতনের সঙ্গে বিশেষ আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয় যা রেলওয়ের পরিভাষায় ‘মাইলেজ’ নামে পরিচিত। প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে রানিং স্টাফরা মূল বেতনের এক বেসিক সমপরিমাণ অর্থ বেশি পান।

আট ঘণ্টাকে এক দিনের কর্মদিবস ধরা হলে তাদের মাসিক কাজ দু–তিন মাসের সমপরিমাণ হয়ে দাঁড়ায়। সে অনুযায়ী তাদের বেতনও প্রদান করা হয়। অবসরকালীন ভাতা হিসেবেও তাদের মূল বেতনের হিসেবে যে ভাতা হয়, তার সঙ্গে অতিরিক্ত ৭৫ শতাংশ অর্থ দেওয়া হয়।

তবে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় এ মাইলেজ সুবিধা বাতিল করে। এরপর থেকেই বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদ ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ কর্মঘণ্টার কারণে অনেক রানিং স্টাফ চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। যেখানে রানিং স্টাফ পদের সংখ্যা দুই হাজার ২৩৫ জন থাকার কথা, সেখানে বর্তমানে এক হাজার ১৩৫ জন কাজ করছেন।

এতে রানিং স্টাফরা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাচ্ছেন না, যা ট্রেন চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি করছে।

২০২২ সালের পর ৩০০ জন নতুন রানিং স্টাফ নিয়োগ পেলেও তাদের নিয়োগপত্রে মাইলেজ সুবিধা বাতিলের কথা উল্লেখ ছিল। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ১৫৮ জন রানিং স্টাফ চাকরি ছেড়ে দেন।

ফলে রানিং স্টাফ সংকট আরও প্রকট হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি মো. সাঈদুর রহমান।

এর আগেও মাইলেজের দাবিতে রানিং স্টাফরা আংশিক কর্মবিরতি পালন করেন। এতে ট্রেনের সময়সূচিতে বিপর্যয় ঘটে এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

চলতি ডিসেম্বর মাসেও রানিং স্টাফদের কর্মসূচির কারণে বেশ কয়েকটি মেইল ও কমিউটার ট্রেনের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article