Saturday, April 19, 2025

যমুনা রেলসেতুতে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু

Must read

উত্তরাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেল।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি ট্রেন যমুনা রেলসেতু পারাপারের মধ্য দিয়ে এ যাত্রা শুরু হলো। মাত্র ৬ মিনিটে ট্রেনটি সেতুটি পার হয়। এ সময় গতিবেগ ছিল প্রায় ৭০ কিলোমিটার।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ বীরবল মন্ডল জানান, ‘প্রথমবারেরমতো বাণিজ্যিক ট্রেন যমুনা রেলওয়ে সেতু পার হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সিডিউল অনুযায়ী বাকি ট্রেনগুলো যাবে।’ এখন থেকে নিয়মিতভাবে যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়েই ট্রেন চলাচল করবে। বঙ্গবন্ধু সেতুতে আর ট্রেন চলবে না।’

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আজাদুর রহমান জানান, ‘রাজশাহী থেকে ৬০০ যাত্রী নিয়ে সকালে ১১ বগির ট্রেনটি ছেড়ে গেছে।’

যমুনা রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান জানান, ‘দুই লাইনের সেতু হলেও প্রথমে একটি লেন দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে। চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। নতুন এ রেল সেতু চালুর সঙ্গে সঙ্গেই বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।’

১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। এ সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করে সরকার। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর রেলসেতুটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেল সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।

প্রথমে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও পরে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশীয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি-জাইকা। দেশের বৃহত্তর এ রেল সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই।

রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের এ রেলসেতু ব্যবহারের জন্য ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হয়।

প্রকল্পের শুরুতে এই সেতুর নাম ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুর নাম পাল্টে যমুনা রেল সেতু রাখা হয়।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article