মৃত্যুর সাত ঘণ্টার মধ্যে দুইবার নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দেন। একটিতে লেখেন , ‘সুখে থাকিস রাজকুমারী। আর কয়েক ঘণ্টা পরে আমার মৃত্যুর খবর শুনতে পাবি। অনেক ভালোবাসতাম তোকে। কিন্তু তুই আমাকে বাঁচতে দিলি না।’ আরেকটিতে লেখেন, ‘শ্রীপুর রেলস্টেশন! আজ রেলে কাটা লাশ হয়ে যাব’। এরপর স্ত্রীকে ফোন করে তিনি বলেন ‘বিদায়’। অপরপ্রান্ত থেকে ট্রেন চলার শব্দ শুনতে পান স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশনের দক্ষিণ দিকের আউটার সিগন্যালের কাছে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ৮টায় তার মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা অভিমুখে দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেন চলে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় খাইরুল বাসার সুজনের (৩৫) মরদেহ পড়ে ছিল।
নিহত খাইরুল বাসার সুজন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুরশা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া গ্রামে থাকতেন। সেখানে থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, শ্রীপুরের চন্নাপাড়া গ্রামে খাইরুল বাসারের সঙ্গে তার স্ত্রী মোসা. ফাতেমাও থাকেন। সকালে খাইরুল বাসার ভাড়া বাড়ি থেকে বের হন। এরপর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও তিনি বাড়িতে ফিরছিলেন না। একপর্যায়ে সন্ধ্যায় স্ত্রী ফোন করলে খাইরুল বাসার জানান তিনি শ্রীপুর রেলস্টেশনে আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্ত্রীকে ফোন করে তিনি বলেন ‘বিদায়’। এরপর ট্রেন চলার শব্দ পান স্ত্রী। দীর্ঘক্ষণ তিনি লাইনে থেকেও আর খাইরুল বাসারের কণ্ঠ শুনতে পাননি।
নিহতের স্বজন মো. আশিক জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে এসে খাইরুল বাসারের মরদেহ শনাক্ত করেন। স্ত্রীকে ফোন কলে রেখে খাইরুল আত্মহত্যা করেছেন। তবে কী কারণে এমনটি হতে পারে তা ধারণা করতে পারছেন না।
শ্রীপুর রেলস্টেশনের মাস্টার শামীমা জাহান বলেন, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেন ঢাকার দিকে শ্রীপুর রেলস্টেশন অতিক্রম করার পর স্টেশনের কাছে ওই ব্যক্তির মরদেহ পাওয়া যায়। রেলওয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।