বিশেষ প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ রেলওয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা প্রকৌশল বিভাগ, যেখানে কর্মরত ওয়েম্যানরা প্রতিনিয়ত জীবন ঝুঁকি নিয়ে রেলপথ সচল রাখার কাজে নিয়োজিত। রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণ, ব্রিজ মেরামত, ট্র্যাক পরিদর্শনসহ প্রতিদিনের কায়িক পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে এই কর্মীরা রেল চলাচলকে নিরাপদ রাখছেন। অথচ দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে এই পরিশ্রমী কর্মচারীরা সরকারি ছুটির ন্যায্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন।
প্রকৌশল বিভাগের ইতিহাস অনুযায়ী, ব্রিটিশ আমল থেকেই ওয়েম্যানদের নির্দিষ্ট ছুটি ও কর্মঘণ্টার বিধান ছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত সে ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে দিনরাতের পরিশ্রমের পরও তারা যথাযথ বিশ্রাম বা পারিবারিক সময় পাচ্ছেন না।
প্রকৌশল বিভাগ কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন,
“কায়িক পরিশ্রমের কারণে প্রকৌশল বিভাগের কর্মচারীরা চাকরির মাঝামাঝি সময়েই নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন— যেমন কিডনি, শ্বাসকষ্ট, হাড়ক্ষয়সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পাওয়ায় তাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা দ্রুত অবনতি হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান,
“প্রায় এক বছর ধরে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ রেলভবনে যোগাযোগ করে আসছেন ক্যাটাগরি নির্ণয় ও ছুটির বিষয়টি সমাধানের জন্য। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”এই অব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘদিনের অবহেলার কারণে মাঠপর্যায়ের প্রকৌশল কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে তারা কর্মবিরতি ও বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।
প্রকৌশল বিভাগের কর্মচারীরা দাবি করেছেন, তাদের কাজ দেশের নিরাপদ রেল চলাচলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই তাদের স্বাস্থ্য ও বিশ্রাম নিশ্চিত না হলে রেল সেবার মানও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
রেলওয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। তবে মাঠপর্যায়ের কর্মচারীরা আশা করছেন, সরকার ও রেল মন্ত্রণালয় দ্রুত তাদের দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ এ পেশায় নিয়োজিত ওয়েম্যানদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত হয়।