বিশেষ প্রতিনিধি :
বাংলাদেশ রেলওয়ের বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রকল্প পরিচালক মোঃ মোজাম্মেল হক–কে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে জারি করা নোটিশে জানানো হয়েছে, “কালুখালী–ভাটিয়াপাড়াঘাট সেকশন এবং কাশিয়ানি–গোপালগঞ্জ–টুঙ্গিপাড়া নতুন রেলপথ নির্মাণ (২য় সংশোধিত)” প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে সাবেক প্রকল্প পরিচালক মোঃ মোজাম্মেল হককে আগামী ১০ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে দুদকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুদকের চার সদস্যের অনুসন্ধান টিমের নেতৃত্বে আছেন সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান। টিমের অন্যান্য সদস্যরা হলেন সহকারী পরিচালক আল-আমিন ও উপসহকারী পরিচালক সাবিকুন নাহার।অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও তমা কনস্ট্রাকশন নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার, ভুয়া এলসি খুলে বিদেশে টাকা পাচার এবং ব্যাংক ঋণ আত্মসাতের মাধ্যমে বিপুল অর্থনৈতিক অনিয়ম করেছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উন্নয়ন বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেত পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। সেই সময় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে নতুন সড়ক, সেতু ও রেলপথ নির্মিত হয়। এই সময় স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ পায় ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও তমা কনস্ট্রাকশন।রেলওয়ের একাধিক প্রকল্পে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড শত শত কোটি টাকার কাজ পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হলো দোহাজারী–কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ (চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ৩,৫০২ কোটি টাকার) এবং আখাউড়া–লাকসাম রেলপথ প্রকল্প (৩,৪৭৩ কোটি টাকার)। এছাড়া রেলওয়ের বাইরে ঢাকা–সিলেট মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে চীনের দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ২,৩২০ কোটি টাকার কাজ করছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার।
অন্যদিকে, রেলের আরেক শীর্ষ ঠিকাদার তমা কনস্ট্রাকশন, দোহাজারী–কক্সবাজার ও আখাউড়া–লাকসাম রেলপথ প্রকল্পে যৌথভাবে ৬,১৬১ কোটি টাকার কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আতাউর রহমান ভূঁইয়া।দুদক সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের নথিপত্র ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য বিশ্লেষণের পর অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

