Wednesday, November 19, 2025

“জয়দেবপুর রেললাইনে উচ্ছেদ অভিযান,আরএনবি ইনচার্জকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ

Must read

স্টাফ রিপোর্টার :

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন কলাপট্টি রেলগেইটে রেললাইনের ওপর গড়ে ওঠা দীর্ঘদিনের অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করতে গিয়ে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) জয়দেবপুর ইউনিটের ইনচার্জ ইমরান হক অভিযোগ করেছেন—উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দেওয়া দখলদারদের পক্ষ নিয়ে গাজীপুর মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ মোল্লা ও তার অনুসারীরা অফিসে ঢুকে তাকে হুমকি, শাসানো এবং আটক ব্যক্তিদের ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। ঘটনাটি ঘটে রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে।আরএনবি সূত্র জানায়, রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে রেললাইনের দুপাশে গড়ে ওঠা সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও রেলের জায়গা দখলমুক্ত রাখার নির্দেশনা আসে। এরই ধারাবাহিকতায় কিছুদিন আগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, মেট্রোপলিটন পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানে রেলক্রসিং ঘিরে গড়ে ওঠা শতাধিক দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে রেলের জায়গায় গাছ লাগানো হয়।

এই জায়গাগুলো রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তা এবং নতুন করে দখল প্রতিরোধের দায়িত্ব ছিল আরএনবি ইনচার্জ ইমরানের ওপর।
ইমরান জানান—
“উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই রেলের জায়গা দখলমুক্ত রাখতে কাজ করি। দখলদাররা আবারও দোকান বসানোর চেষ্টা করলে আমরা অভিযান চালাই। সেই সময় তারা গাছ উপড়ে ফেলছিল।”অভিযানের সময় দখলদাররা আরএনবির কাজে বাধা দেয় এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে। আরএনবি দুইজনকে বাধাসৃষ্টির কারণে আটক করে। মুহূর্তেই পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করলে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে আটক দুজনকে আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।উত্তেজনার পরপরই যুবদল নেতা মাসুদ মোল্লা তার অনুসারীদের সঙ্গে আরএনবি অফিসে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ করেছেন ইনচার্জ ইমরান।

তিনি বলেন—
“অবৈধ দখলদারদের পক্ষ নিয়ে তারা আমাকে বিভিন্নভাবে শাসাতে থাকে। চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ তুলে অপদস্থ করার চেষ্টা করে। আমাকে চাপ দেওয়া হয় আটক ব্যক্তিদের ছেড়ে দিতে। পরে তারা মুচলেকা দিয়ে আটক দুজনকে নিয়ে যায়।”

প্রত্যক্ষদর্শীরাও জানান—অফিসে গিয়ে উত্তেজনাকর ভাষায় হুমকি-ধামকি দেওয়া হয় এবং পরিস্থিতি এক পর্যায়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ঢাকা অঞ্চলের কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান—
“ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। ইনচার্জের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।”

তিনি আরও বলেন—
“রেলের জায়গায় বৃক্ষরোপণ ছিল রেলের পরিকল্পিত উদ্যোগ। এসব গাছ রক্ষা, রেললাইন নিরাপদ রাখা এবং জায়গা দখলমুক্ত রাখা ছিল আরএনবির দায়িত্ব। কোনো অবস্থাতেই রেলের জমিতে অবৈধ দোকান বসতে দেওয়া হবে না।”স্থানীয়রা জানান—রেলক্রসিং এলাকায় বহু বছর ধরে অবৈধ দোকানপাট গড়ে ওঠায় ট্রেন চলাচল ঝুঁকিতে ছিল। উচ্ছেদ কার্যক্রমকে তারা স্বাগত জানালেও দখলদাররা আবারও জায়গা দখলের চেষ্টা করছে।
একজন স্থানীয় বলেন—
“রেললাইন এলাকায় অবৈধ দোকান থাকা বিপজ্জনক। আরএনবি নিয়মিত অভিযান করছে, কিন্তু দখলদাররা প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে ফিরে আসে।”

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article