Tuesday, November 19, 2024

লালমনিরহাট রেলস্টেশনে ইঞ্জিনের ধাক্কায় ট্রেনের ২৫ যাত্রী আহত

Must read

লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন প্ল্যাটফর্মে ইঞ্জিনের (লোকোমোটিভ) ধাক্কায় একটি ট্রেনের ২৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত চারজনকে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, পাটগ্রামের বুড়িমারী থেকে পার্বতীপুরগামী ৪৫৬/৪৬১ নম্বর লোকাল ট্রেনটি লালমনিরহাট স্টেশনে এলে ইঞ্জিন বদলের জন্য অপর একটি ইঞ্জিন লোকশেড থেকে এগিয়ে আসতে থাকে। এ সময় লোকোমাস্টার রাজ গোবিন্দ ইঞ্জিনটি চালাচ্ছিলেন। ট্রেনটির কাছাকাছি আসার সময় ইঞ্জিনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দ্রুতগতিতে বগিগুলোকে ধাক্কা দিলে বিকট শব্দ হয়। এতে বগির অভ্যন্তরে থাকা যাত্রীরা ছিটকে পড়ে গিয়ে আঘাত পান। অনেকে আতঙ্কে দিগ্‌বিদিক ছুটতে থাকেন। এ সময় অন্তত ২৫ জন আহত হন। এর মধ্যে গুরুতর আহত চারজনকে লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহত অন্যরা বিভিন্ন স্থানে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ব্যক্তিরা হলেন নবিজুল ইসলাম (৬০), জাহেদুল ইসলাম (৪০), শেফালি আক্তার (৪০) ও সামিনা খাতুন (৬২)।

দুর্ঘটনায় আহত শেফালি আক্তার বলেন, ‘আমি জানতাম, ইঞ্জিন বদলের সময় তেমন জোরে ধাক্কা দেয় না। কিন্তু কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইঞ্জিন প্রবল বেগে ধাক্কা দিলে আমি মাটিতে পড়ে যাই। আমার মাথায় দুটি সেলাই পড়েছে।’

আহত নবিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি রংপুর যাওয়ার উদ্দেশে ট্রেনে উঠেছিলাম। হঠাৎ ধাক্কায় আমার মাথা সিটের লোহায় লেগে ফেটে রক্ত বের হচ্ছিল। বুঝতে পারছিলাম না কী হচ্ছে। পরে আমাকে লোকজন রেলওয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। সেখানে আমার মাথায় চারটি সেলাই দিয়েছেন ডাক্তার।’

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমাদের এখানে জরুরি বিভাগে গুরুতর আহত চারজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহত অন্য ব্যক্তিরা বিভিন্ন স্থানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে শুনেছি।’

ধাক্কা দেওয়া ইঞ্জিনটির চালক (লোকোমাস্টার) রাজ গোবিন্দ দাস বলেন, ‘ইঞ্জিনের ব্রেক লাগাতে দেরি হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইঞ্জিনের গতি ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার ছিল।’

লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার নূরনবী বলেন, ইঞ্জিন বদলে আরেকটা ইঞ্জিন সংযুক্ত করার সময় সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জোরে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওই ইঞ্জিনের লোকোমাস্টার রাজ গোবিন্দ সেই ট্রেন নিয়ে ইতিমধ্যে রওনা করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেনেছেন। তাঁরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

লালমনিরহাট রেল বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) শাহিনুল হক বলেন, ‘আমরা অভিযুক্ত লোকোমাস্টারকে আপাতত আর কোনো ট্রেনের দায়িত্ব দেব না। তবে দুর্ঘটনার পর বিকল্প লোকোমাস্টার না থাকায় তিনি দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ঘটনা তদন্তে ইতিমধ্যে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article