বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশনে যাত্রীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ট্রেনের দুই পরিচালকসহ মোট পাঁচজন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। ওই যাত্রীরা ট্রেনের পরিচালকের কামরা ও পাশের ইঞ্জিন রুমে ভাঙচুর করেছেন।
সান্তাহার রেলওয়ে থানা–পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়েছেন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় রেলওয়ের কর্মচারীরা পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে কাঠ ফেলে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় স্টেশন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আহত ওই ট্রেনের দুই পরিচালক ও পরিচার্যকের বরাত দিয়ে সান্তাহার স্টেশনের স্টেশনমাস্টার হাবিবুর রহমান জানান, পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি সান্তাহার জংশন স্টেশনে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে আসে। ট্রেন থামার পর যাত্রীরা ছোটাছুটি করতে থাকেন। এ সময় ট্রেনের ভেতর থেকে আবদুল মালেক নামের এক পরিচার্যককে (অ্যাটেনডেন্ট) রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। সে সময় ট্রেনের ভেতর ব্যাপক হইচই ও চিৎকার শোনা যায়।
আহত আবদুল মালেক জানান, হামলার সঙ্গে জড়িত অনেক যাত্রীর কাছে টিকিট ছিল না। তাঁরা নিজেদের সেনাসদস্য বলে পরিচয় দেন। ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) আবদুস সাত্তার তাঁদের কাছে টিকিট চাইলে তাঁরা পরিচালকের সঙ্গে তর্ক–বিতর্কে জড়িয়ে যান। একপর্যায়ে ওই যাত্রীদের কয়েকজন পরিচালক আবদুল রাকিব ও সাত্তারকে ব্যাপক মারধর করে আহত করেন। এ সময় তাঁরা ট্রেন পরিচালকের কামরা ও পাশের ইঞ্জিন রুমে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। ওই যাত্রীদের হামলায় দুই ট্রেন পরিচালক ও পরিচার্যকেরা ট্রেন থেকে নেমে পালিয়ে যান। এ সময় ছবি তুলতে গেলে ওই যাত্রীরা রেলওয়ে পুলিশ ও সাংবাদিকদের বাধা দেন। পরে পুলিশ দুই ট্রেন পরিচালককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সেখানে তাঁরা কান্না করতে থাকেন।
ট্রেন পরিচালকের কামরার মেঝেতে অনেক রক্ত পড়ে থাকতে দেখা যায় এবং সেখানে মুঠোফোন ও কাগজপত্র ছড়িয়ে–ছিটিয়ে ছিল। সংঘর্ষে জড়িত ওই যাত্রীরা সেনাসদস্য কি না, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোক্তার হোসেন জানান, বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।