Tuesday, November 19, 2024

পণ্য সরবরাহ করেননি ঠিকাদার, বিল পরিশোধ করে দেন রেলে তিন কর্মকর্তা

Must read

মালামাল সরবরাহ না করার পরও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করার অভিযোগে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অন্যজন হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। অনুসন্ধান শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. আহসানুল কবীর বাদী হয়ে আজ বুধবার চট্টগ্রাম কার্যালয়ে এই মামলা করেন।

দুদকের মামলায় আসামিরা হলেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ফরিদ আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক মুহাম্মদ রাশেদুল আমিন ও প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী তাপস কুমার দাস, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির স্বত্বাধিকারী এম এ শুক্কুর। মুহাম্মদ রাশেদুল আমিন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষে (বেজা) উপসচিব হিসেবে কর্মরত।

মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, পিগ আয়রন (গ্রেড-৩) নামের এক ধরনের লোহা সরবরাহ না করে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা তুলে নেন ঠিকাদার। রেলওয়ের তিন কর্মকর্তার যোগসাজশে এভাবে মালামাল সরবরাহ না করে বিল তোলা হয়েছে। দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত প্রথম আলোকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তবে মালামাল না নিয়ে বিল পরিশোধের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক মো. ফরিদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁরা মালামাল বুঝে নিয়েছেন। এ-সংক্রান্ত সব ধরনের কাগজপত্র দুদককে সরবরাহ করা হয়েছিল। এরপরও কেন মামলা করেছে, তা তাঁর বোধগম্য নয়।

এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, রেলওয়ের পক্ষ থেকে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ ১৪৬ দশমিক ৯২৭ টন পিগ আয়ন কেনার চাহিদা দেওয়া হয় প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে। তবে বাজেট  স্বল্পতার কারণে ৮৫ মেট্রিক টন ক্রয় করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রতি টনের দাম নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ৩৪ হাজার ১০০ টাকা। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি, ফরম জমা ও মূল্যায়নসহ নানা আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষ করে ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট পিগ আয়রন কেনার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রতি টন ১ লাখ ৬২ হাজার ২০০ টাকা দরে সরবরাহ করে, যা প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ৩১ শতাংশ কম। সাধারণ প্রাক্কলন ব্যয়ের সঙ্গে মালামাল ক্রয়ের পার্থক্য ১০ শতাংশ বেশি বা কম হয়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠান মেসার্স ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি ৮৫ টনের জন্য দর দেয় ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।  প্রাক্কলিত দর অনুযায়ী ৮৫ টন পিগ আয়রনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ কোটি ৯৮ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা। দাম যাতে দুই কোটি টাকার ওপরে না যায়, সে জন্য  ৮৫ টন কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কেননা দুই কোটি টাকার বেশি হলে তখন আর্থিক ক্ষমতা অনুযায়ী মন্ত্রীর কাছ থেকে দরপত্র অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। দুই কোটি টাকার কম হলে মহাপরিচালক অনুমোদন দিতে পারেন।

দুদকের এজাহারে বলা হয়েছে, টেন্ডার কমিটির সদস্যরা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে  ৮৫ টন মালামাল সরবরাহ না করে সরকারের ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাতের অপরাধ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়েছে। এ জন্য রেলের তিন কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article