হঠাৎ রেলস্টেশনে বিকল হয়ে পড়ে ঢাকাগামী বলাকা কমিউটার ট্রেন। এ অবস্থায় স্টেশনমাস্টারকে একটি আন্তনগর ট্রেন থামাতে বলেন ট্রেনটির যাত্রীরা। কিন্তু সেটি না করায় স্টেশনমাস্টারকে অবরুদ্ধ করা হয়। সেই সঙ্গে বিকল ট্রেনটির লোকোমাস্টারকে (চালক) লাঞ্ছিত করেন তাঁরা। পরে পুলিশের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে রাত পৌনে ৭টায় স্টেশনটিতে বিকল হয় বলাকা কমিউটার নামের ট্রেনটি। পরে রাত পৌনে ১১টায় রিলিফ ট্রেনের সহযোগিতায় এটি আবার ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।
রেল কর্মকর্তা-কর্মচারী, যাত্রী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল প্রথমে ফাতেমানগর রেলস্টেশনে বিকল হয়েছিল ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বলাকা কমিউটার ট্রেনটির ইঞ্জিন। পরে আরেকটি ইঞ্জিনের সহায়তায় ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে। পথে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে শ্রীপুর রেলস্টেশনের উত্তর দিকে গিয়ে আবার বিকল হয় এটি। লোকোমাস্টার ট্রেনটিকে রেলস্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত নিয়ে আসতে সমর্থ হন। পরে যাত্রীরা রিলিফ ট্রেনের জন্য প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করতে থাকেন। একই পথে ঢাকামুখী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন আসার খবর পেয়ে যাত্রীরা সেটিকে শ্রীপুর রেলস্টেশনে থামানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু ওই রেলস্টেশনে ট্রেনটির নিয়মিত যাত্রাবিরতি না থাকায় সেটিকে থামাতে অপারগতা প্রকাশ করেন দায়িত্বরত স্টেশনমাস্টার শামিমা জাহান।
আর এতেই যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন বলে জানান কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁরা বলেন, এর একপর্যায়ে তিস্তা ট্রেনটি স্টেশন অতিক্রম করলে যাত্রীরা স্টেশনমাস্টারের কক্ষে হামলার চেষ্টা করেন। পরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি। একই সময়ে বলাকা কমিউটার ট্রেনের লোকোমাস্টারের সঙ্গে যাত্রীদের কথা–কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাঁদের হাতে লাঞ্ছিত হন লোকোমাস্টার। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় শ্রীপুর থানার পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে রাত পৌনে ১১টায় একটি রিলিফ ট্রেনের সহায়তায় ঢাকার উদ্দেশে আবার রওনা হয় বলাকার যাত্রীরা।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, খবর পেয়ে রেলস্টেশনে পুলিশ সদস্যদের পাঠানো হয়। তাঁরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছেন।
শ্রীপুর রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার শামিমা জাহান জানান, বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ট্রেন বিকল হলেও ওই পথে অন্য ট্রেনের চলাচলে কোনো ধরনের বিঘ্ন ঘটেনি।