ইঞ্জিন সংকটে যাত্রীসেবার মান ধরে রাখতে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন। এজন্য বিদ্যমান ইঞ্জিন সংস্কারে নেয়া হচ্ছে বিদেশী সংস্থার সহযোগিতা। কোরীয় কোম্পানির পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তায় যন্ত্রাংশ আমদানির মাধ্যমে দ্রুত বহরে থাকা ইঞ্জিনগুলো রেলের ওয়ার্কশপে মেরামত করা হবে বলেও জানান আফজাল হোসেন।
গতকাল চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ ও ডিজেল অ্যান্ড ক্যারেজ শপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সুবক্তগীন, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা, বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক এবিএম কামরুজ্জামানসহ পূর্বাঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বিপুল বিনিয়োগের পরও ইঞ্জিন সংগ্রহ কার্যক্রমে রেলের অদূরদর্শিতার বিষয়টি স্বীকার করে মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি প্রকৌশল সংস্থা। সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন সংকট, যথাযথ বিভাগে বাজেট সরবরাহে ঘাটতির কারণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও মালপত্র সংগ্রহে জটিলতা ছিল। রেলওয়ে বর্তমানে নিজস্ব ওয়ার্কশপের মাধ্যমে কোচ, ইঞ্জিন মেরামতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। রেলের কয়েকটি বিশেষায়িত কারখানাকে আরো বেশি শ্রমঘন করে দক্ষ কর্মীদের দিয়ে দ্রুত মেরামত কার্যক্রম শুরু করা হবে। এজন্য বিদেশী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে রেলওয়েকে আগের চেয়ে আরো বেশি গতিশীল ও যাত্রীবান্ধব করা হবে।’
রেলওয়ের কর্মীদের আবাসন ও সুপেয় পানির সমস্যা সমাধান, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে নেয়া প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া ছাড়াও জনবল নিয়োগ দেয়ার মাধ্যমে যাত্রীসেবার মান বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালক। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের দৈনিক লোকোমোটিভের চাহিদা ১১৬টি। দৈনিক পাওয়া যায় ৭০-৭৫টি। তবে কানেক্টিং ইঞ্জিনসহ স্বল্প দূরত্বের যাত্রাপথের ফিরতি ইঞ্জিনের মাধ্যমে কোনো রকমে সার্ভিস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে রেলওয়ে। সাম্প্রতিক সময়ে রেলের মিটার গেজ ইঞ্জিনগুলোর বিকল হওয়ার হার অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এ কারণে ট্রেন অপারেশন বিঘ্নিত হচ্ছে। সর্বশেষ ছয় মাসে পূর্বাঞ্চলে পথিমধ্যে ১২২টি ইঞ্জিন বিকল হয়েছে, যার মধ্যে শুধু ডিসেম্বরে বিকল হয়েছে ৩৮টি।