লালমনিরহাটে ‘বিডিআর গেট’ খ্যাত রেলের ব্যস্ততম লেভেল ক্রসিং গেট এর কাছে চল্লিশ বছর ধরে দখলে থাকা জমি অবশেষে আজ দখলমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলের জমিকে দখলমুক্ত করতে লালমনিরহাট রেলওয়ের ডিআরএম (বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক) জনাব লিয়াকত শরীফ খানের নির্দেশে বিভাগীয় প্রকৌশলী ও বিভাগীয় এস্টেট অফিসার জনাব নাজিব কায়সারের নেতৃত্বে একটি সফল উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে এই জমি পুনরুদ্ধার করা হয়। এর আগে গত ১২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখেও একটি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু সেইসময় সাময়িকভাবে দখলমুক্ত জমিতে ফেন্সিং এর কাজ শুরু করতে গিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়ে লালমনিরহাট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরে উক্ত গেইটে বংশপরম্পরায় স্থায়ীভাবে দোকান স্থাপন করে ফল ব্যবসা করে আসছিলেন তারা। এরপর পাঁচ দিন কাজ বন্ধ রাখার পর আরও শক্তভাবে আজকে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে সক্ষম হয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। শুরুতে স্থানীয় ফল ব্যবসায়ীরা উচ্ছেদ অভিযানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মারমুখী আচরণ করলেও অবশেষে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয় উচ্ছেদ অভিযান। এরই মধ্য দিয়ে অবসান হয় দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছরের দখলদারিত্ব। নিজেদের জমি ফিরে পেয়ে লালমনিরহাট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জায়গার দখল বুঝে নিতে সেখানে রেলফেন্সিং এর কাজ শুরু করে। এই বিষয়ে উচ্ছেদ অভিযানের তদারককারী বিভাগীয় প্রকৌশলী জনাব নাজিব কায়সার উচ্ছ্বসিত অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। এই কাজে সহায়তা করার জন্য কমান্ড্যান্ট, আরএনবি ও ওসি জিআরপিকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি দৈনিক সাবাস বাংলাদেশকে বলেন, “ফিরে পাওয়া এই স্থানে প্রচুর পরিমাণ বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে একটি রেলওয়ে উদ্যান নির্মাণ করা হবে, ইনশাআল্লাহ।” উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই গত ২১ জানুয়ারী ২০২৫ বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) জনাব মামুনুল ইসলাম লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগ পরিদর্শন করেন। এই সময় তিনি গাছ লাগিয়ে ‘রেলওয়ে উদ্যান’ এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
এদিকে লালমনিরহাট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের রেলের জমি উদ্ধারের এই কঠোর কর্মসূচীকে ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখছেন রেলপ্রেমীরা। সচেতন মহলের দাবি, একইভাবে রেলের যত বেদখল জমি আছে তা উদ্ধার করে রেলের নিজস্ব কাজে তথা নানাধরণের স্থাপনা ও রেললাইন নির্মাণের কাজে ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়েকে আরো গতিশীল ও যুগোপযোগী করা হোক। দখলদার যে-ই হোক, শক্ত হাতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে রেলকে দখলদারমুক্ত করা হবে এমনটিই তাদের চাওয়া।