Saturday, April 19, 2025

আন্তনগর সব ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘণ্টাব্যাপী রেলপথ অবরোধ

Must read

ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রেলপথের ব্যস্ততম ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে সবকটি আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতিরসহ ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলপথে একটি আন্তনগর স্পেশাল ট্রেন প্রদানের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে রেলপথ অবরোধ করেন জেলার সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। সম্মিলিত সামাজিক-সাংস্কৃতি সংগঠনের ব্যানারে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচি চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী বিরতিহীন আন্তনগর সূবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাঘাচং রেলওয়ে স্টেশনে আটকা পড়ে। পরে প্রশাসনের আশ্বাসের পর প্রায় আধা ঘণ্টা পর ট্রেনটি পাঘাচং রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

অবরোধ কর্মসূচিতে থাকা জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মুবারক হোসাইন বলেন, ‘আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন গড়ে দশ থেকে বারো হাজার যাত্রী ট্রেনে ভ্রমণ করে থাকে। তার বিপরীতে মাত্র ৬০০ টিকিট এখানে বরাদ্দ করা হয়েছে। এই অল্প পরিমাণ টিকিট দিয়ে আমাদের কিছু করা সম্ভব না। তাই আমরা চাচ্ছি আমাদের যে দাবি রয়েছে কালোনী, উপবন ও বিজয় এই তিনটি ট্রেন যেন জরুরিভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে স্টপেজ দেওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘অল্প কিছুদিনের মধ্যে নরসিংদী কমিউটার নামে একটি ট্রেন ভৈরব থেকে ছেড়ে ঢাকায় যাবে বলে আমরা জেনেছি। আমরা দাবি জানাই, এই ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন থেকে যাত্রা যেন শুরু করা হয়। রাজধানীর সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার যোগাযোগ সহজ করার জন্যে আমরা যে আন্দোলন গড়ে তুলেছি বিগত সাত বছর ধরে আমরা এই আন্দোলন করছি। আমরা চাচ্ছি, অনতিবিলম্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে তিনটি ট্রেনের যেন স্টপেজ দেওয়া হয় এবং নরসিংদী কমিউটার ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে যাত্রা শুরু করতে হবে। অন্যথায় আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এ বি এম মমিনুল হক বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দৈনিক গড়ে সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার যাত্রী ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। এ অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের জন্যে মাত্র ৭০০ আসনের ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওপর দিয়ে দৈনিক ২৪ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। তার মধ্যে মাত্র ১২টি ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশনমাস্টার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে প্রতিদিন প্রায় ছয় হাজার লোক আসা-যাওয়া করে। এখানে প্রায় ছয় জোড়া ট্রেন যাত্রাবিরতি দেয়। এ ছাড়া ননস্টপেজ মিলিয়ে প্রত্যেকদিন প্রায় ২৪ জোড়া ট্রেন আসা যাওয়া করে। আমরা যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে টিকিট সরবরাহ করতে পারি না। এতে করে আসনবিহীন টিকিটে যাত্রীদের আসা-যাওয়া করতে হয়। তাদের এই আন্দোলনের ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আগেই অবগত করেছি। এখন পুনরায় অবগত করবো।’

এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচির খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়া ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে আন্দোলনরতদের দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিলে রেলপথ থেকে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article