ঢাকার জনপ্রিয় গণপরিবহন মেট্রোরেলের ভাড়া পরিশোধে স্থায়ী কার্ড র্যাপিড পাসের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু এ কার্ডের চাহিদা মেটাতে পারছে না মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে একক যাত্রার পাস কিনে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা।
মেট্রোরেলে তিন ধরনের কার্ড ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে স্থায়ী কার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে র্যাপিড ও ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পাস। অস্থায়ী হিসেবে একক যাত্রার পাস বিক্রি হয়। এর মধ্যে এমআরটি বা র্যাপিড পাসে যাতায়াত করলে টিকিটের মূল্যে ১০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যায়। এ কারণে এ কার্ডের জন্য দিনে হাজারো চাহিদা রয়েছে। তবে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে মেট্রোরেলে র্যাপিড পাসের সংকট চলছে। এ কারণে মেট্রোরেলে ভ্রমণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।
তবে ডিএমটিসিএলের দাবি, সরকারের অনুমোদন না থাকায় ডিএমটিসিএল নিজেরা র্যাপিড কার্ড সংগ্রহ করতে পারছে না। এ কার্ড সংগ্রহে দায়িত্বে রয়েছে আরেক সরকারি সংস্থা ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ)। কিন্তু এই সংস্থার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তারা যথাসময়ে ডিএমটিসিএলকে কার্ড সরবরাহ করতে পারছে না। ডিটিসিএ ও ডিএমটিসিএল সরকারের সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দুটি সংস্থা।
জানতে চাইলে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার বলেন, ‘মেট্রোরেলের র্যাপিড কার্ড সংকট কমাতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ কার্ড চলে আসছে। বাকি কার্ড চলতি মাসের মধ্যেই চলে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘এ র্যাপিড পাস কার্ড মেট্রোরেলের পাশাপাশি অন্যান্য গণপরিবহনে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। আরও কয়েকটি ধাপে এ কার্ড সংগ্রহ করা হবে।’
র্যাপিড পাস: ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রথম মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়। এখন ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পথে মেট্রোরেল চলাচল করে। এ গণপরিবহনে ভাড়া পরিশোধে ডিটিসিএ একটি প্রকল্পের আওতায় জাপানের নিপ্পন সিগন্যাল কোম্পানি থেকে তিন লাখ ১৩ হাজার একক যাত্রার এবং সাত লাখ ২৮ হাজার এমআরটি পাস কেনে। ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সেগুলো বিক্রি হয়। এরপর আর যাত্রীরা এমআরটি পাস কিনতে পারেনি।
তবে যাত্রী চাহিদা মেটাতে গত জানুয়ারিতে প্রাইম পাওয়ার সলিউশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে আড়াই লাখ র্যাপিড পাস সরবরাহের দায়িত্ব দেয় ডিটিসিএ। তারা ইন্দোনেশিয়া থেকে কার্ড আমদানি করে ডিএমটিসিএলকে দিচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যে তাদের সব কার্ড সরবরাহের কথা। তবে এখন পর্যন্ত তারা মাত্র এক লাখ ১৮ হাজার র্যাপিড পাস সরবরাহ করতে পেরেছে।