সেলিমুর রহমান:
রেল নিউজের বিশেষ সাক্ষাৎকারে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন—ঢাকা মেট্রোরেলের কোনো প্রকল্পই বাতিল হয়নি, বরং ব্যয় যৌক্তিক করতে সরকার ও ডিএমটিসিএল একসঙ্গে কাজ করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অস্বাভাবিক ব্যয় প্রস্তাবের কারণে দরপত্র প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
উত্তরা দিয়াবাড়িতে ডিএমটিসিএল প্রধান কার্যালয়ে রেল নিউজের সঙ্গে তার এই বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,
“কিছু ঠিকাদার প্রকৃত ব্যয়ের চেয়ে ২০০–২৫০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় বাড়িয়ে দেখিয়েছে। তাই ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিযোগিতা বাড়াতে আমরা দর কষাকষি করছি। কোনো প্রকল্প বন্ধ হয়নি, কাজ এগিয়ে যাচ্ছে পরিকল্পনা অনুযায়ী।”সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো গুজব সম্পর্কে প্রশ্ন করলে এমডি ফারুক আহমেদ রেল নিউজকে বলেন—
“আমরা কোনো প্রকল্পই বাতিল করছি না। বরং সরকার ব্যয় কমানোর জন্য দূরদর্শী পদক্ষেপ নিচ্ছে। ভুল তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে।”
তিনি জানান, এমআরটি লাইন–১ ও লাইন–৫ (উত্তরাংশ) এ নতুন করে ব্যয় যাচাইয়ের কাজ চলছে এবং এতে প্রকল্প গতিশীলতা বাধাগ্রস্ত হবে না।সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন,
বর্তমানে এমআরটি লাইন–৬ উত্তরা–মতিঝিল অংশ পুরোপুরি কার্যকর।প্রতিদিন চলাচল করছে প্রায় সাড়ে চার লাখ যাত্রী।২০২৭ সালের শুরুতেই কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ চালু হবে।অন্যান্য রুটেও পূর্ণ গতিতে কাজ চলছে।
এমডির ভাষায়—
“মেট্রোরেল এখন রাজধানীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও দ্রুতগতির গণপরিবহন। এটি চলমান থাকবে; বরং আরও শক্তিশালী হবে।”
রেল নিউজের বিশেষ প্রশ্নে নিজের নাগরিকত্ব নিয়ে চলমান আলোচনার জবাবে ফারুক আহমেদ পরিষ্কারভাবে বলেন—
“আমি জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক। ভারতের নাগরিক নই। ভারতে চাকরি করার সময় নিয়ম অনুযায়ী আধার কার্ড নিতে হয়েছিল, এর কোনো সম্পর্ক নাগরিকত্বের সঙ্গে নেই। পাশাপাশি আমার অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্ব আছে—এটা আইনসিদ্ধ।”
তিনি আরও জানান—
“বিশ্বের বড় বড় প্রকল্পে বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা কাজ করেন। অস্ট্রেলিয়া, ভারত, হংকং, দুবাই—এসব দেশের বহু বিশেষজ্ঞ আমাদের প্রকল্পে কাজ করেছেন।”
রেল নিউজকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী—
এই প্রথম আন্তর্জাতিক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমডি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
এমডি পদের জন্য মোট ৭৬ জন আবেদন করেছিলেন ।বুয়েট উপাচার্যের নেতৃত্বে কমিটি ১৪ জনের তালিকা তৈরি করেন এবং ২ জনের নাম চূড়ান্ত হয়,ফারুক আহমেদ প্রথম হওয়ায় সড়ক মন্ত্রণালয় তাঁকে নিয়োগ দেয়।এ তথ্য নিশ্চিত করেন ডিএমটিসিএলের কোম্পানি সেক্রেটারি খোন্দকার এহতেশামুল কবীর।
সাক্ষাৎকারের শেষে এমডি বলেন—“ব্যয় কমানো মানে কাজ কমানো নয়। বরং কম খরচে বেশি মান নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। মেট্রোরেলের সব প্রকল্পই চলছে এবং ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারণ করা হবে।”

