বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলে যুক্ত হচ্ছে সর্বোচ্চ গতির ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ)। এই প্রথম ট্রেনচালকেরা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) কামরায় বসে ট্রেন চালাবেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে আজ শনিবার তিনটি ইঞ্জিন রাজশাহী ও ঈশ্বরদীর মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ৪০টি ইঞ্জিন বাংলাদেশ পশ্চিম রেলে যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে চারটি ঈশ্বরদী লোকশেডে এসে পৌঁছেছে। আগামীকাল রোববার এই চারটি ট্রেনের পরীক্ষামূলক চলাচল শেষ হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪০টি অত্যাধুনিক ইঞ্জিন আনা হচ্ছে। তার মধ্যে আটটি ইঞ্জিন দেশে এসে পৌঁছেছে। এর চারটি ঈশ্বরদী লোকশেডে পরীক্ষামূলক চালানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত করে তিনটি ইঞ্জিন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছে। কাল রোববার চারটি ইঞ্জিনের পরীক্ষামূলক চলাচল শেষ হবে। শুধু কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের বগির সঙ্গে লাগিয়ে পরীক্ষামূলক চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ, দিনে ঈশ্বরদী ও রাজশাহীর মধ্যে চলাচলকারী একটি ট্রেনই রয়েছে। ইঞ্জিনগুলো চালানোর সময় বাইরের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি সঙ্গে রয়েছেন। চালানোর সময় যেসব ত্রুটি বা অসংগতি পাওয়া যাবে, পরে সেগুলো ঠিক করে আনুষ্ঠানিকভাবে এগুলো চালানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ৪০টি ইঞ্জিন বাংলাদেশ পশ্চিম রেলে যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে চারটি ঈশ্বরদী লোকশেডে এসে পৌঁছেছে। আগামীকাল রোববার এই চারটি ট্রেনের পরীক্ষামূলক চলাচল শেষ হবে।
গত বৃহস্পতিবার প্রথম ইঞ্জিন চালিয়েছেন চালক তৌহিদুল ইসলাম (৫৬)। তিনি ২০০৮ সাল থেকে লোকোমোটিভ মাস্টার হিসেবে পশ্চিম রেলে কর্মরত আছেন। তার আগে সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, এই ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার। কিন্তু তাঁদের চালানোর জন্য আপাতত সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেঁধে দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত তিনি সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৯৩ কিলোমিটার তুলেছিলেন। তিনি বলেন, রাজশাহী থেকে আবদুলপুর পর্যন্ত ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার, আর আবদুলপুর থেকে আজিমনগর পর্যন্ত ঘণ্টায় ৯৩ কিলোমিটার গতিতে চালিয়েছেন। এই সেকশনে এর চেয়ে বেশি গতিতে চালানো যায় না।
তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এই ইঞ্জিনের আগে-পিছে ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। তাই মনিটরের মাধ্যমে সামনে কী আছে, তা দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। জিপিএস লাগানো রয়েছে। রাতের অন্ধকারেও তাই বোঝা যাবে ট্রেনটি কোথায় রয়েছে।
তৌহিদুল ইসলাম বলেন, চালকদের জন্য এই প্রথম এসি কামরার ব্যবস্থা হয়েছে। গরমের সময় লোহা তেতে বেশি গরম হয়ে যায়। তখন গরম লাগে বেশি। আবার শীতের সময় লোহা ঠান্ডা হয় বেশি, তখন ঠান্ডা লাগে। সব সময়ই তাঁরা শীত-গরমের কষ্ট ভোগ করেছেন। যাত্রীরা এসিতে যেতে পারলেও চালকদের এই কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। এইটুকুই ভালো লাগা যে এত দিনের কষ্টটা এবার দূর হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, এর আগে দেশে ৩ হাজার ২০০ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন ছিল। এবার ৩ হাজার ৩০০ হর্সপাওয়ারের অত্যাধুনিক ৪০টি ইঞ্জিন পর্যায়ক্রমে পশ্চিম রেলে যুক্ত হবে।